নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে তোলা ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাবেক তিন সংসদ সদস্যের (এমপি) একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কারা বিধি এবং প্রভাবশালীদের কারাগারে বিশেষ সুবিধা নিয়ে। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি ছিল ‘সাধারণ সৌজন্য সাক্ষাৎ’ এবং অন্য সব কয়েদির মতোই কুশল বিনিময়ের অংশ।
ভাইরাল ছবিটিতে দেখা যায়, ধর্ম উপদেষ্টার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ফেনী-৩ আসনের সাবেক স্বতন্ত্র এমপি রহিম উল্লাহ, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী এবং চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক এমপি এম এ লতিফ। তাঁদের পেছনে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী থানার সাবেক ওসি রফিকুল ইসলাম, বেসরকারি কারা পরিদর্শক মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও কারা উপমহাপরিদর্শক টিপু সুলতান।
বেসরকারি কারা পরিদর্শক মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান, ১৫ জুলাই ধর্ম উপদেষ্টা কারাগারকে একটি “সংশোধনাগারে” রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান। তিনি মহিলা ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সেল ঘুরে প্রায় ৫০ জন কয়েদির সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের অভিযোগ শোনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন।
তাঁর ভাষ্যমতে, “ধর্ম উপদেষ্টা হাঁটতে হাঁটতে একটি সেল ব্লকে গেলে সেখানে সাবেক তিন সংসদ সদস্যের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি তাদের সাথেও অন্যান্য কয়েদির মতোই কুশল বিনিময় করেন।”
সিনিয়র জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, “কারাগারের ভেতরে আলাদা করে বৈঠক বা রাজনৈতিক আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। উপদেষ্টা সরকারি সফরে এসে কারাগারের রান্নাঘর, ওয়ার্ড ও সেল ব্লক ঘুরে দেখেন। সাবেক সংসদ সদস্যদের সঙ্গে তার দেখা হওয়াটা নেহাতই পরিস্থিতির ফল।”
তবে ছবির আলোকে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে—কারাগারে প্রভাবশালীদের বিশেষ সুবিধা, নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে।
উল্লেখ্য, সাবেক এমপি এম এ লতিফ, নদভী ও রহিম উল্লাহ বর্তমানে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি ও সহিংসতার মামলায় কারাবন্দি রয়েছেন।
ধর্ম উপদেষ্টার কারাগার পরিদর্শনের সময় এমন ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’কে সাধারণ জনগণ অনেকেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা বলে মন্তব্য করছেন। তবে এ বিষয়ে উপদেষ্টা কিংবা সংশ্লিষ্ট এমপিদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় কারা অধিদপ্তর থেকেও আলাদাভাবে কোনো তদন্তের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলে ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় চলছে।