ঢাকায় চিকিৎসার জন্য এসে একই পরিবারের তিন সদস্য—স্বামী, স্ত্রী ও তাদের শিশুসন্তান—রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, বিষক্রিয়াজনিত কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসী মনির হোসেন, তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার এবং তাঁদের শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈম হোসেন শনিবার রাজধানীর মগবাজারে একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছিলেন। রাতের খাবার খাওয়ার পর তিনজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন। রবিবার দুপুরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
হোটেলে রাত, খাবার ও অসুস্থতা
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, মনির হোসেন পরিবার নিয়ে বিকেলে হোটেল ‘সুইট স্লিপ’-এ ওঠেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, যিনি মনিরের ঢাকার বাসা দেখভাল করেন। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রফিকুল সন্ধ্যায় একটি ব্যাগে খাবার নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করেন। রাত আটটার দিকে মনির হোসেন নিচে নেমে পানি নিয়ে ফেরেন। পরে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
রবিবার সকালে রফিকুল ইসলাম তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে ফিরে আসেন এবং প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে, পরে মনির হোসেনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হোটেলের কর্মীরা তাঁদের ছেলেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনজনের মৃত্যু হয় বলে চিকিৎসকেরা জানান।
হত্যার আশঙ্কা, পুলিশের তদন্ত
স্বজনদের দাবি, খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। স্বপ্না আক্তারের খালাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আমার বোন ও তার পরিবারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।”
রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক জানান, খাবার খাওয়ার পর বমি ও অসুস্থতা দেখা দেয়—এমন তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। এ ঘটনায় সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মৃতদের ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
নিহতদের পরিচয়
মনির হোসেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম সেরাজুল হক ব্যাপারী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে প্রবাসে ছিলেন। মনিরের আরও দুটি সন্তান রয়েছে।